রংপুরে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে আবাদি জমি ও বসতবাড়ি

মহানগর প্রতিবেদক:
রংপুরে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে অবাধে চলছে ক্যানেল, নদ-নদীর বালু উত্তোলন। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন চেষ্টা করলেও, প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পাচ্ছে না। এর ফলে নদীর তীর, আবাদি জমি এবং বসতভিটা পড়ছে হুমকির মুখে।
রংপুর জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রংপুরে শতাধিক স্পট থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, তবে অনুমোদিত বালু মহল রয়েছে মাত্র একটি এবং চারটি বালু মহল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার যমুনেশ্বরী নদীর ১৮টি স্থান থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রতিদিন এসব স্থান থেকে শত শত ট্রাক বালু সরবরাহ হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়, যার কারণে নদীতীর এবং আশপাশের আবাদি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। একইভাবে, রংপুর নগরীর দমদমা এলাকায় ঘাঘট নদীর পার ঘেঁষা ফসলি জমি থেকে ভেকু দিয়ে মাটি কাটছে আরেকটি প্রভাবশালী চক্র।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বালু উত্তোলনকারীরা ক্ষমতাশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। ক্ষমতাসীনদের ভয়ে জমির মালিকরা তাদের জমি ইজারা দিতে বাধ্য হচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বলেন, ‘পাশের জমি জোর করে নিয়ে মাটি কাটছে স্থানীয় মেম্বারের পরিবারের সদস্যরা। এ কারণে আমাদের জমি ভেঙে পড়ছে, অনেকেই বাধ্য হয়ে জমি বিক্রি করছে।’
এছাড়াও অনেকের সাথে কথা বলে নাম না জানানোর সত্বে জানা যায়, ‘কিছু প্রভাবশালী লোক তাদের জোর খাটিয়ে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করছে। ফলে আমাদের আবাদি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এটি অবশ্যই প্রশাসনের দৃষ্টিতে আনা উচিত। পুলিশ ও প্রশাসন এখানে আসলেও কোনো কাজ হচ্ছে না, যা দুঃখজনক।’
জানতে চাইলে রংপুর জেলা প্রশাসক মো. রবিউল ফয়সাল বলেন, ‘আমরা বালু উত্তোলনের ব্যাপারে পুরোপুরি তৎপর রয়েছি। দিন-রাত অভিযান চললেও কিছু এলাকায় বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না। আমাদের এখানে একটি বৈধ বালু মহল রয়েছে মিঠাপুকুরের তরফসাদী এলাকায় এবং আরও চারটি বালু মহল প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
জেলা প্রশাসক বলেন, ‘আমরা দমদমা ব্রিজের নিচে বালু উত্তোলনের বিষয়টি কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। অপরাধী যত বড় প্রভাবশালী হোক, তাদের শাস্তি পেতেই হবে।