কাউনিয়ায় হারাগাছে ড্রেজারে বালু তোলায় হুমকিতে নির্মাণাধীন সেতু

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকায় তিস্তার শাখা নদীতে নির্মাণাধীন সেতুর নিচ থেকে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ সাব-ঠিকাদার সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন করে রাস্তা নির্মাণ করছে। এতে হুমকিতে পড়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকার সেতু। বালু উত্তোলন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
হারাগাছ পৌর প্রকৌশলীর কার্যালয় থেকে জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে সরকারি অর্থায়নে হারাগাছ, পীরগঞ্জ ও বদরগঞ্জ পৌরসভা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হারাগাছ মেনাজবাজার গোল্ডেনঘাট এলাকায় তিস্তার শাখা নদীর ওপর ৮৪ মিটার গার্ডার সেতু এবং সেতুর দুইপার্শে ১৬৫ মিটার রাস্তা নির্মাণের দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজটি পান ঠিকাদার খায়রুল কবীর রানা। ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৬৬ হাজার ৩৪৭ টাকা সেতু নির্মাণে এবং ৬৮ লাখ ১৮ হাজার ৬৫৭ টাকা রাস্তা নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়। তব তাঁর কাছ থেকে সাব-ঠিকাদার হিসেবে কাজটি নেন আশিক। কাজ শুরু ২০২৪ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী। চলতি বছরের ২০ ফেব্রুয়ারী কাজটি শেষ করার কথা।
সোমবার সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার হারাগাছ পৌর এলাকায় তিস্তার শাখা নদীর ওপর সেতু ও রাস্তা নির্মাণ কাজ চলছে। ঠিকাদারের লোকজন নির্মাণাধীন সেতুর নিচ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে সেতুর পশ্চিম পার্শে রাস্তা নির্মাণ করছে। এতে নির্মানাধীন সেতুটি ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
গোল্ডেনঘাট এলাকার বেশ কয়েকজন বলেন, তিস্তার শাখা নদীর ওপর সেতু না থাকায় দশ গ্রামের হাজার হাজার মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দীর্ঘ প্রায় একযুগ এলাকাবাসীর দাবীর প্রেক্ষিতে নদীর ওপর সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু সাব-ঠিকাদার প্রভাব খাটিয়ে ৫ আগষ্টের পর নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে রাস্তা তৈরি করে। এখন আবার ঠিকাদারের লোকজন সেতুর নিচে থেকে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করে সেতুর পশ্চিম পার্শে রাস্তা নির্মাণ করছে। তারা বলেন, সেতুর নিচ থেকে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করায় নির্মাণাধীন সেতুটি বন্যার সময় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কথা হয় সাব-ঠিকাদার আশিকের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, নির্মাণাধীন সেতুর নিচে ভরাট হওয়া বালু ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে সেতুর কোনো ক্ষতি হবে না। বালু উত্তোলন করে সেতুর দুই পাশে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। সোমবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্থা ঘটনাস্থলে এসেছিল। আমরা প্রশাসসকে বলেছি সেতুর নিচে ভরার হওয়া বালু ড্রেজার ছাড়া সরানো সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহিদুল হক বলেন, তিনি পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সেতুর নিচ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র ছাড়া ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্মাণাধীন সেতুর নিচে ভরাট হওয়া বালু ড্রেজারে উত্তোলন করতে পারবে না বলে নিদের্শ দেওয়া হয়েছে।