মিঠাপুকুরে সমিতির ঋণ খেলাপি ব্যক্তির নামে চাপিয়ে টেন্ডার নেয়ার চেষ্টা

রংপুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরে মিঠাপুকুর উপজেলার বড় হযরতপুর ইউনিয়নে জলমহাল ইজারা নেয়ার জন্য সমিতির ঋণ খেলাপি ব্যক্তির নামে চাপিয়ে জলমহালের টেন্ডার বাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে এক মৎস্যজীবী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড় হযরতপুর ইউনিয়নের নওয়াপুকুর জলমহাল (৮.৬২একর) এর ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হলে নিয়ম অনুযায়ী অত্র ইউনিয়নের সেরুডাঙ্গা বিলের পাড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড পাঁচ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকার ইজারামূল্যে সর্বোচ্চ দরপত্র দাখিল করে ও উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নের মাটিয়া খোলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড ৪,৮০,০০০ টাকায় দরপত্র দাখিল করে। নিয়ম অনুযায়ী জলমহালের নিকটবর্তী সমিতি হিসেবে ও সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সেরুডাঙ্গা বিলের পাড় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড দরপত্র পাওয়ার কথা থাকলেও এই সমিতির সাবেক সভাপতি আশরাফ মিয়াকে তার পূর্বতন সমিতি বড় হযরতপুর ইউনিয়ন মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি লিমিটেডের নামে হওয়া ঋণ খেলাপির দায় আশরাফ মিয়ার উপর চাপিয়ে দিয়ে ইজারা বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে রংপুর জেলার মৎস্যজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুধীর চন্দ্র জীবন ও সহ সভাপতি শ্রী খিতিশ চন্দ্র দাশ এবং কার্যকরী সদস্য এনামুল হকের নেতৃত্বে মাটিয়া খোলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি ও আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠন মৎস্যজীবীলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য মোঃ ফরিদ মিয়ার বিরুদ্ধে।
এবিষয়ে ভুক্তভোগী মোঃ আশরাফ মিয়া জানান, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও মিঠাপুকুরে এখনো বহাল তবিয়তে স্বৈরাচারের দোসররা। এই স্বৈরাচার আওয়ামীলীগের অঙ্গ সংগঠন মৎস্যজীবি লীগ নেতা মোঃ ফরিদ মিয়া স্থানীয় কিছু বিএনপি নেতার সহযোগিতায় দূরবর্তী অন্য ইউনিয়নের ভূঁইফোড় মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির নামে আমার উপর বেআইনি অভিযোগ তুলে টেন্ডার বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। আমার নামে কোন ঋণ খেলাপি নেই। আমি যে সমিতি থেকে পদত্যাগ করেছি অনেক আগেই।সেই সমিতির নামের ঋণখেলাপীর দায় আমার উপর চাপিয়ে টেন্ডার নেয়ার চেষ্টা করছে। আমি এই স্বৈরাচারের দোসরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিযোগ রয়েছে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ২০২০ সালে দলীয় ক্ষমতা প্রয়োগ করে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে মারধর ও অফিস ভাংচুর করেছিলো সুধীর চন্দ্র জীবন ও কতিপয় মৎস্যজীবীলীগ নেতা। এবিষয়ে উপজেলার সাবেক মৎস্য কর্মকর্তা খালেদ মোশাররফ বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছিলো। যা এখনো চলমান রয়েছে।
এবিষয়ে কথা বলতে মৎস্যজীবী লীগ নেতা ও অভিযুক্ত মোঃ ফরিদ মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার একটা সমিতি আছে। কোন অফিস ঘর নাই। কিছু সদস্য আছে। ষড়যন্ত্র করে টেন্ডার বাগিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করতেই ফোন কেটে দেন মৎস্যজীবীলীগের এই নেতা।
মিঠাপুকুর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মোছাঃ মাহফুজা বেগম জানান, টেন্ডার পাওয়ার ক্ষেত্রে নিকটবর্তী সমিতি ও সর্বোচ্চ দরদাতাকে প্রাধান্য দেয়া হয়। একই সাথে টেন্ডারদাতা প্রকৃত মৎস্যজীবি কিনা সেটা যাচাই করে দেখা হয়। নওয়াপুকুর জলমহাল ইজারার বিষয়ে ইউএনও স্যার ভালো জানেন। তার সঙ্গে কথা বলুন।
মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মণ জানান, জলমহাল ইজারা প্রদানের জন্য প্রকৃত মৎস্যজীবি ও মৎস্যচাষী গনের হতে টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। সে মোতাবেক টেন্ডার ড্রপ করেছে। যা এখন যাচাইবাচাই করা হচ্ছে। যাচাইবাছাই সাপেক্ষে জলমহাল নীতিমালা অনুযায়ী চূড়ান্ত করা হবে।