নির্মল রায়,গঙ্গাচড়াপুর):

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় গবাদি পশুর শরীরে দেখা দিয়েছে ‘লাম্পি স্কিন’ (এলএসডি) রোগ। রোগটির সুনির্দিষ্ট কোনো প্রতিষেধক না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক ও খামারিরা। কোরবানির ঈদের আগে এমন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় খামারিদের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তায় ভাঁজ।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্যমতে, উপজেলায় এ পর্যন্ত অন্তত পাঁচ শতাধিক

গরু এ রোগে সংক্রমিত হয়েছে।

ইতিমধ্যে কয়েকটি গরু মারা গেছে। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে খামারি ও কৃষকদের মাঝে।

বুধবার সকালে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে

লাম্পি স্কিন আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা নিতে আসা উপজেলার আলম বিদিতর ইউনিয়নের পাইকান ঢিং পাড়ার আসমা খাতুন (৫০) জানান, তার এলাকার অনেক কৃষকের গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে।

আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান এলাকার বুলু মিয়া (৪৮) বলেন, সামনে ঈদুল আযহা উপলক্ষে একটি গরু প্রস্তুত করছিলাম। গত এক সপ্তাহ আগে গরুটি ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়। ফলে বাধ্য হয়ে গরুটি কম দামে বিক্রি করেছি।

তিনি আরো বলেন, প্রতিনিয়ত এ রোগের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। ফলে গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও খামারীরা। এ পরিস্থিতিতে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন মালিকরা।

গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল এর ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মোঃ ইউসুফ আলী সরকার বলেন, লাম্পি স্কিন রোগ একটি ভাইরাস জনিত রোগ, প্রথমে গরুর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে তারপর শরীরজুড়ে পক্সের মতো ছোট ছোট মাংসপিন্ডের মতো ফুলে ওঠে। কিছুদিন পর সেগুলো ফেটে রক্ত বের হতে পারে। এ সময় গরুর খাবার খাওয়া কমে যায় এবং দুর্বল হয়ে পরে। এমতাবস্থায় ভেটেরিনারি সার্জন এর পরামর্শ ব্যাতিত কোনো অবস্থাতেই এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা যাবে না।

রোগের প্রতিকার সম্পর্কে তিনি বলেন,

রোগ আক্রান্তের  সাথে সাথেই অসুস্থ প্রাণীটিকে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। এছাড়া ‘অসুস্থ প্রাণীটিকে প্রথমেই আলাদা করতে হবে। মশারি টানিয়ে রাখতে হবে, যাতে মশা বা মাছি তার শরীরে না বসে। কেননা মশা বা মাছি অসুস্থ গরুটিকে কামড় দিয়ে আবার যদি সুস্থ কোনো গরুকে কামড়ায় তাহলে সেটিও অসুস্থ হয়ে পড়বে। সুস্থ গরুকে অবশ্যই প্রতিবছর লাম্পি রোগের টিকা দিতে হবে।