পলাশবাড়ীতে ওয়ার্ড বয় মিজানই সার্জন!

বায়েজিদ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) :
গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে আলোচিত ‘মা ক্লিনিকে’ (ফাতেমা ক্লিনিক) গর্ভবতী লাকি বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।
জানা গেছে, ক্লিনিকটিতে নিয়মিত সিজারিয়ান অপারেশন পরিচালনা করে আসছিলেন একজন সাধারণ ওয়ার্ড বয়—মিজান। তার বাড়ি রংপুরে। প্রথমে তিনি রংপুর শহরের বিভিন্ন ক্লিনিকে ওয়ার্ড বয় হিসেবে কাজ করতেন। পরে পীরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। সেখানকার অভিজ্ঞতার আলোকে ধীরে ধীরে সার্জনের ভূমিকা পালন শুরু করেন। এরপর ‘কসাই’ ফাতেমার আশ্রয়ে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে পলাশবাড়ীতে দীর্ঘ দুই বছর ধরে নিয়মিত সিজার অপারেশন করে আসছিলেন।
সম্প্রতি নিহত লাকি বেগমের মৃত্যুর পর তার পেটের ভেতর থেকে একটি কাঁচি উদ্ধারের ঘটনায় বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। মৃত্যুর পর বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চললেও শেষ পর্যন্ত স্থানীয়দের চাপ ও গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের ফলে সব তথ্য উন্মোচিত হয়।
ছবিতে দেখা যায়, অপারেশনের সময় মিজান ও তার সহকারী অপারেশন থিয়েটারে উপস্থিত; অথচ কারোই নেই কোন প্রাতিষ্ঠানিক ডাক্তারি ডিগ্রি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ফাতেমা একজন সরকারি হাসপাতালের নার্স হলেও তার নিজের ক্লিনিকে নিয়মিত অবৈধভাবে সিজার পরিচালনা করে থাকেন। তার ভাইও একসময় নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগীদের অপারেশন করতেন এবং একাধিক মৃত্যুর ঘটনায় জড়িত ছিলেন।
এ ক্লিনিকেই গত দুই মাসে আরও দুই রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃতদের একজনের বাড়ি ইদিলপুর ইউনিয়নের কুঞ্জমহিপুর গ্রামে এবং অন্যজনের বাড়ি মাদারহাটে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দালালচক্রের মাধ্যমে গর্ভবতী নারীদের জোর করে ক্লিনিকে আনা হয় এবং বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে সিজার করানো হয়। এসব অপচিকিৎসায় অনেকে প্রাণ হারাচ্ছেন।
জনমনে প্রশ্ন—‘কসাই ক্লিনিক’টির পেছনে কারা আছেন? কে বা কারা তাদের রক্ষা করছে? প্রশাসন এখনো নীরব কেনও।