নিজস্ব প্রতিবেদক:

আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চাই যেখানে দেশব্যাপী সমান্তরাল উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বৃদ্ধি পাবে মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা।

রংপুরের টাউনহলে অবস্থিত রঙ্গপুর সাহিত্য পরিষদ হলরুমে রোববার (২২ জুন) দুপুরে সম্মিলিত ছাত্র-জনতার প্ল্যাটফর্ম আয়োজি রংপুরের বাজেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিয়াম আহসান আয়ান। এ সময় পাশে ছিলেন সংগঠনের সভাপতি সামি ইবনে অম্বরসহ নেতৃবৃন্দ।

এ সময় তিনি বলেন, আমরা এই প্ল্যাটফর্ম থেকে সুস্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই যে, আমরা দেশব্যাপী ন্যায়সঙ্গত উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক বরাদ্দ বুঝে পেতে চাই। ২০২৪ এর মহাবিপ্লব পরবর্তী ঐতিহাসিক জনসমর্থনপুষ্ট সরকারের কাছে দেশবাসীর প্রত্যাশা ছিল যে, তারা কোনোভাবেই নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবেন না।

সিয়াম বলেন, কিন্তু আমরা গভীর পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করলাম যে, চলমান বাজেটে রংপুরের বরাদ্দ শুন্যের কোঠায়। বিগত রাজনৈতিক সরকারের মতো আবারো রংপুর বৈষম্যের শিকার হলো! এই বঞ্চনা আমাদের জন্য অতি দুঃখের, অতি লজ্জার! আমরা ইতোপূর্বে লক্ষ্য করেছি যে, উপদেষ্টা পরিষদে রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কাউকে রাখা হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের এই নেতা বলেন, আমরা বিভাগের প্রতিনিধিত্বকারীরা একজন উপদেষ্টা চাইলাম, প্রধান উপদেষ্টা বললেন, তিনি নিজেকে রংপুরের সন্তান মনে করেন। আমরা ন্যায্য অধিকারের বাস্তবায়ন চাইলাম, তিনি বললেন, রংপুর হবে ১নম্বর জেলা! কিন্তু বিগত ০৯ মাসে বাস্তবতা পুরোপুরি ভিন্ন। চীনের হাসপাতাল, বিভাগীয় স্টেডিয়াম, আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সহ বিভাগের প্রয়োজনীয় প্রতিষ্ঠান গুলো তার উপদেষ্টা পরিষদ পার্শ্ববর্তী জেলায় সরিয়ে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। অথচ তিনি নিশ্চুপ! আমরা উপস্থিত মিডিয়ার মাধ্যমে পরবর্তী ৭২ ঘন্টার মধ্যে এগুলো বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অবস্থান স্পষ্ট করার জন্য আহ্বান জানাই।

সিয়াম আহসান আয়ান বলেন, আমরা আরো লক্ষ্য করলাম যে, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র অপসারিত হবার পর তার দায়িত্বে আছেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার। সুতরাং রংপুরের বরাদ্দ বঞ্চনার দায় তিনি কোনো ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারেন না। পাশাপাশি বিভাগীয় সদর দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ায় বিভাগীয় সদরের জন্য প্রাপ্ত বরাদ্দ সদর দপ্তরের বাইরে নিয়ে যেতে চাইলে তিনি তা ঠেকাতে দৃশ্যমান কি পদক্ষেপ নিয়েছেন তার ব্যখ্যাও পরবর্তী ৭২ ঘন্টার মধ্যে তাকে স্পষ্ট করতে হবে।

দেশবাসীর উদ্যেশ্যে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “সম্মিলিত ছাত্র-জনতার প্ল্যাটফর্ম আপনাদের দ্বারা, আপনাদের জন্যেই সৃষ্ট। বিগত আন্দোলনে আপনাদের যে সহায়তা এবং সমর্থন পেয়েছি তার জন্য আমরা সাংগঠনিক ভাবে কৃতজ্ঞ। আপনাদের স্বাক্ষী রেখে আমরা সুস্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই যে, আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টা এবং বিভাগীয় কমিশনারের পক্ষ থেকে উল্লিখিত বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা না পেলে এই প্ল্যাটফর্ম আপনাদের সাথে নিয়েই পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

উল্লেখ্য-সম্মিলিত ছাত্র-জনতার প্ল্যাটফর্ম একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যা জন্মলগ্ন থেকেই রংপুর জেলা ও রংপুর বিভাগের ন্যায়সঙ্গত এবং যৌক্তিক উন্নয়নের দাবিতে লড়াই করে চলেছে। ইতোমধ্যেই এই প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে রংপুরের উন্নয়নে ১৮ দফা দাবি স্মারকলিপি আকারে পেশ করার পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।