মিঠাপুকুরে ২ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দফায় দফায় উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগ
 
            
মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের মিঠাপুকুরে ২ পুলিশের বিরুদ্ধে দফায় দফায় উৎকোচ গ্রহনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। আসামী গ্রেফতার ও চার্জশীট প্রস্তুত করতে এক ভুক্তভোগীর কাছ হতে টাকাগুলো গ্রহন করেন তারা। পরে আসামীদের কাছ হতে আরও মোটা অংকের উৎকোচ নিয়ে বাদীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা দায়ের করেছেন। ওই অভিযুক্ত ২ পুলিশ হলেন- খোড়াগাছ ইউনিয়ন বিট কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহরাব হোসেন ও উপ-পরিদর্শক (এসআই)আতিকুর রহমান।
সরজমিনে গিয়ে এলাকাবাসির সাথে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার খোড়াগাছ পশ্চিমপাড়া গ্রামে মোছাব্বির বকসি্ নামে একজন জমিজমা সংক্রান্তের জেরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর হামলা ও মারপিটের শিকার হন। এর দুদিন পর ২৬ তারিখে আবারও তার গ্রামে এসে প্রতিপক্ষের লোকজন ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এসময় তার পা ও মাথায় গুরুত্বর জখম হয়। কয়েকদিন হাসপাতলে চিকিৎসাধীন ছিলেন মোছাব্বির। পরে এ ঘটনায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে ২৯ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পান খোড়াগাছ ইউনিয়ন বিট কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন। এরপর তিনি ও আরেক বিট কর্মকর্তা আতিকুর রহমান মিলে আসামী গ্রেফতার করতে প্রথম দফায় ৯ হাজার, দ্বিতীয় দফায় ৫ ও তৃতীয় দফায় ৪ হাজার টাকা গ্রহন করেন। গ্রেফতার করা হয় মামলার ৬ নম্বর আসামী রতন মিয়াকে। এরই মধ্যে মামলার প্রধান আসামী মনিরুজ্জামান জুয়েল প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও গ্রেফতার করছিল না পুলিশ। তাকে গ্রেফতারের জন্য চতুর্থ দফায় এসআই সোহরাব হোসেন আরও ১০ টাকা উৎকোচ নেন। তারপরও গ্রেফতার না করায় বাদী ও ওই ২ পুলিশ কর্মকর্তার মধ্যে মনমালিন্য সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ আসামীদের সাথে সক্ষতা গড়ে বাদীকে পাল্টা মামলার ভয় দেখান ও উৎকোচ দাবি করেন। ঘটনার ১৭ দিন পরে মোছাব্বির বকসিসহ ৩ জনকে আসামী করে পাল্টা মামলা দায়ের হয়। মামলার বাদী আসামী মনিরুজ্জামান জুয়েলের মা মোছুদা বেগম। তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব পান এসআই আতিকুর রহমান।
কয়েকজন এলাকাবাসি জানায়, মোছাব্বির বকসি্র গ্রামে এসে জুৃয়েলের লোকজন হামলা, মারপিট ও ছুরিকাঘাত করল। মামলা হলো। আবার পাল্টা মামলাও হলো। ২ পুলিশ মুলত এখানে বাদী ও আসামীদের সাথে বানিজ্য করেছে।
মামলার স্বাক্ষী মজিবুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর আহত মোছাব্বির বকসি্র ফাটা মাথা আমি বেধে দেই। আমি যে ক্ষতটা দেখেছি, সেটি ধারলো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন।
মামলার বাদী ও ভুক্তভোগী মোছাব্বির বকসি্ বলেন, মামলা করার পর আসামী ধরতে ৪ দফায় ২৮ হাজার টাকা নিয়েছে। পরে আরো টাকার জন্য আসামীদের সাথে লিয়াজু করল। পাল্টা মামলার করল। সেই মামলার নাম কেটে দেওয়ার জন্য এসআই আতিকুর রহমান আমার কাছে মোটা অংকের টাকা চেয়েছিল। আমি না দেওয়ায় বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও অভিযুক্ত এসআই সোহরাব হোসেন বলেন, একজন আসামী গ্রেফতার করছি। এখন যদি সে এসব কথা বলে, তাহলে তো দুঃখজনক। লেনদেন করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
অভিযুক্ত আরেক এসআই আতিকুর রহমান বলেন, এতোকিছু বলতে পারবো না ভাই। সে মামলা করছে আসামী ধরে কোর্টে চালান দেওয়া হয়েছে। একজন আসামী পলাতক আছে। বাকিরা জামিন নিয়ে আসছে।
১৭ থেকে ১৮ দিন পর পাল্টা মামলা কিভাবে হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা তো বলতে পারবো না। একজন বাদী চাইলে অভিযোগ বা মামলা করতে পারে। তার বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে সেটার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ হোক।
মিঠাপুকুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
 
           
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
                