সুন্দরগঞ্জে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া সেই যুবকের মৃত্যু
 
            
হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা):
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নে পারিবারিক কলহের জেরে শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া সেই যুবক মো. রায়হান মিয়া (২৭) মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ভোররাতে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোকলেছুর রহমান মণ্ডল।
এর আগে গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে নিজ বাড়িতে নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন রায়হান মিয়া। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
রায়হান উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের উত্তর ধোপাডাঙ্গা গ্রামের মো. চান মিয়ার ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে একই ইউনিয়নের বড় দিঘিরপাড় গ্রামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন রায়হান। তাদের দুই সন্তান রয়েছে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রায়হান মিয়া অনলাইনে জুয়া ও অন্য নারীর প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। সম্প্রতি এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ধরা পড়েন তিনি। পরে শাশুড়ির অনুরোধে স্ত্রী আদুরী বেগম নিজের গহনা বিক্রি করে স্বামীকে ছাড়িয়ে আনেন। কিন্তু তাতেও পরিবর্তন আসেনি রায়হানের আচরণে। কিছুদিন পর আবারও আরেক নারীকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন তিনি, যা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব ও নির্যাতন।
নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। পরবর্তীতে রায়হানের বাবা ছেলের বউকে ফিরিয়ে আনতে গেলে আদুরী বেগম শর্ত দেন “মারধর বন্ধ করতে হবে, আর জুয়া খেলা ছাড়তে হবে।”
এতে ক্ষুব্ধ হয়ে রায়হান মিয়া মোবাইল ফোনে বাবাকে হুমকি দিয়ে স্ত্রীকে না আনতে বলেন। কিছুক্ষণ পরই ক্ষোভে নিজের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তিনি। পরে পুকুরে ঝাঁপ দিলেও শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়।
রায়হানের শাশুড়ি বলেন, আমার বিয়াই মেয়েকে নিতে এসেছিলেন। মেয়ে বলেছিল, আমি যাব, তবে যেন আর মারধর না করে। এতটুকু বলতেই বিয়াই চিন্তায় পড়ে ফিরে যান। পরে শুনি রায়হান আগুন দিয়েছে নিজের গায়ে।এ নিয়ে রায়হানের পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, ঘটনা সম্পর্কে আমরা জেনেছি, তবে এ বিষয়ে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
 
           
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
  
                     
                