রেহেনার চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা দারিদ্রতা
নির্মল রায়:
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের পাইকান চওড়াপাড়ার রিকশাচালক রশিদুল ইসলামের মেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী রেহেনা আক্তার সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও অর্থাভাবে অনিশ্চয়তায় পড়েছে তার পরিবার।
২০২৫–২৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে রেহেনা আক্তার জাতীয় মেধাতালিকায় ৪১১তম স্থান অর্জন করে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য নির্বাচিত হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় তার মোট প্রাপ্ত নম্বর ১৮৩.৭৫ (লিখিত পরীক্ষায় ৮৩.৭৫)।
তিস্তার ভাঙনে সবকিছু হারিয়ে পরিবারটি গঙ্গাচড়া উপজেলার পাইকান চওড়াপাড়ায় নতুন করে বসতি গড়ে তোলে। জীবিকার তাগিদে পরিবারের কর্তা মো. রশিদুল ইসলাম ঢাকায় রিকশা চালিয়ে কোনো রকমে সংসার চালান। তার স্ত্রী মোছা. সুইটি আক্তার বিভিন্ন বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করে সংসারের খরচ জোগান।
চরম দারিদ্র্য, অনিশ্চয়তা ও সীমাহীন ত্যাগের মধ্য দিয়েই তারা মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। সেই কঠিন সংগ্রামের ফল হিসেবেই রেহেনা আক্তার দেশের অন্যতম সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে।
তবে এই সাফল্যের আনন্দ মুহূর্তেই পরিবারটির সামনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থাভাব। মেডিকেলে ভর্তি ফি, আবাসন, বইপত্র ও অন্যান্য খরচ বহন করার মতো আর্থিক সামর্থ্য তাদের নেই। ফলে কীভাবে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে পরিবারটির।
রেহেনার বাবা মো. রশিদুল ইসলাম বলেন, মেয়েকে ডাক্তার বানানোর স্বপ্ন দেখেই এত কষ্ট সহ্য করেছি। সে আজ মেডিকেলে চান্স পেয়েছে, কিন্তু অর্থের অভাবে ভর্তি করাতে পারছি না-এটাই সবচেয়ে বড় কষ্ট। রেহেনা আক্তার জানায়, সে চিকিৎসক হয়ে অসহায় ও দরিদ্র মানুষের সেবা করতে চায়। সমাজের বিত্তবান ও সহানুভূতিশীল মানুষের সহযোগিতা পেলে তার এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে পরিবারটি।