নবান্ন উৎসবকে ঘিরে উত্তরের গ্রামীণ জনপদ কর্মচাঞ্চল্যে মুখর
বিরামপুর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
গ্রামবাংলার চিরায়ত উৎসব নবান্নকে ঘিরে এখন গ্রামীণ জনপদে চলছে সাজ সাজ রব। নতুন ধান তুলতে হবে ঘরে। আর সেই ধানের চাল দিয়ে তৈরি ক্ষির-পায়েস প্রিয়জনদের মুখে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে কৃষক খুঁজে পায় বর্ষায় বৃষ্টিতে ভিজে ফসল আবাদের স্বার্থকতা। বন্যার প্রভাবমুক্ত দিনাজপুর জেলার বিরামপুর ও পার্শ্ববতী উপজেলায় আমন ধান কেটে ঘরে তোলা ও নবান্ন উৎসবকে ঘিরে কৃষকের পাশাপাশি গ্রামীণ নারীরাও কর্মচাঞ্চল্যে মুখর হয়ে উঠেছে। কৃষকরা মাঠ থেকে নতুন ধান কেটে ঘরে তোলার আগে কৃষক বধুদের নিতে হয় নানা প্রস্তুতি। নতুন ধানের চাল থেকে তৈরি ক্ষির-পায়েস ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য দিয়ে অতিথি আপ্যায়নের মাধ্যমে দিনাজপুর অঞ্চলে পহেলা অগ্রহায়ন পালিত হয় নবান্ন উৎসব।
এবার বন্যার করাল গ্রাসে বিভিন্ন জেলার আমন ফসল বিনষ্ট হলেও শস্য ভাÐার খ্যাত দিনাজপুর জেলার বিরামপুর ও পার্শ্ববর্তী উপজেলায় বন্যার কোন প্রভাব পড়েনি। এ কারণে এখানে নবান্ন উৎসবের আনন্দ রয়েছে অটুট। নতুন ধান ঘরে তোলা নিয়ে গ্রামের মানুষ এখন কর্মচাঞ্চল্যে মুখর। নতুন ধান আসার আগে নিজেদের বাড়ি ঘর ঝেড়ে মুছে পরিস্কারের কাজ করে নেন মহিলারা। এখনও মাটির দেওয়ালে বিভিন্ন রং ও চুন দিয়ে আল্পনা এঁকে নারীরা ফুটে তোলেন তাদের শিল্পী মনের ভঙ্গিমা।
কৃষকরা মাঠ থেকে ধান কেটে আনলে কৃষক বধুরা সেই ধান পানিতে ভিজিয়ে রাখেন। একরাত পর ভিজানো ধান সিদ্ধ করে শুকানো হয় রোদে। ঐ ধান ঢেকিতে বা মেশিনে ভানলে বেরিয়ে আসে মুক্ত বরণ চাল। আর সেই নতুন চাল দিয়ে তৈরি ক্ষির-পায়েস পরিবার পরিজনের মুখে তুলে দিয়ে তৃপ্ত হন গ্রামীণ নারীরা। এরপর প্রতিবেশি, আত্মীয়-স্বজন ও অতিথি আপ্যায়নের পালা চলে সপ্তাহ জুড়ে। নবান্ন উপলক্ষ্যে ভোজ উৎসবে মাংশের জোগান দিতে বিভিন্ন গ্রামে জবাই করা হয় গরু-খাসি। নবান্নের আয়োজনকে সামনে রেখে এখন কর্মচাঞ্চল্যে মুখর প্রতিটি গ্রাম।
উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম মোহনপুরের কৃষক জহির উদ্দিন এবং জোতবানী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক নিশ্চিত করেছেন, উপজেলায় এবারও ১লা অগ্রহায়ন থেকে সপ্তাহব্যাপী চলবে নবান্ন উৎসব।#