ফুলবাড়ীতে স্বেচ্ছাশ্রমে ২০০ ফিট লম্বা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ
আব্দুল আজিজ মজনু:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে স্বেচ্ছাশ্রমে দুই’শ ফিট লম্বা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জনদুর্ভোগ লাঘবে গত ২০ দিন যাবত এই সাঁকো নির্মাণ করছেন।
গত ২০/২২ বছর ধরে সেতু নির্মাণতো দুরের কথা সরকারি ভাবে সাঁকোটি নির্মাণের ব্যবস্থা না করায় চরম দুর্ভোগের শিকার হয় দুই পাড়ের হাজারো মানুষ। ফলে দুই পাড়ের বাসিন্দারা সাঁকোটি পূর্ণ নির্মাণ করে কোনো রকমে চলাচল করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার কিশামত শিমুলবাড়ী এলাকায় করিমের ঘাটে বারোমাসিয়া নদীর উপর নির্মিত ২০০ ফুট লম্বা বাঁশের সাঁকোটি বিভিন্ন অংশে ভেঙে যাওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন দুই পাড়ের মানুষজন। ভারী বস্তা বা পণ্যসামগ্রী পারাপার করতে হিমশিম খাচ্ছেন নিয়মিত ভাবে। বিশেষ করে নারীসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা সতর্কভাবে পারাপার হলেও অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হন।
বছরের পর বছর স্থানীয়রা সেতুর দাবি করে আসলেও ২০/২২ বছরও পারাপারে নির্মাণ করা হয়নি। বর্তমানে জরাজীর্ণ ভাঙা সাঁকোটির চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এখন ওই পথে চলাচলগামীরা চরম ভোগান্তি নিয়ে জীবনের ঝুঁকিকে উপেক্ষা করে সাঁকো দিয়ে পারাপার করছেন।
বর্তমানে স্থানীয় নবিউল ইসলাম, ওবায়দুল হক সেফাত, মিন্টু, নাকাই চন্দ্র, বেলালসহ দুই পাড়ের বাসিন্দাদের নিজস্ব উদ্যোগে গত ২০ দিন ধরে বাঁশের সাঁকোর পূর্ণ নির্মাণের কাজ শুরু করায় দুই পাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস বইছে।
স্থানীয় নবিউল ইসলাম, ওবায়দুল হক ও রাজু আহমেদ জানান, নদীর স্রোত ও উজান থেকে পানির সাথে কচুরি পানা আসায় সাঁকোটি বিভিন্ন অংশে ভেঙে যাওয়ায় আমাদের দুই পাড়ের বাসিন্দাদের মাঝে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। আমরা চরম দুর্ভোগ সহ্য করে আসছি। অনেকেই বাঁশ, অর্থ ও শ্রম দিয়ে সাহায্য করছেন।
মৎস ব্যবসায়ী আতাউর রহমান রতন জানান, সাঁকোটির দৈর্ঘ্য প্রায় ২০০ ফুট। এই সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ পারাপার করে। প্রতিবছর আমরা নিজেদের উদ্যোগে সাঁকোটি পারাপারের উপযোগী করি। এই নদীতে একটি ব্রিজ নির্মাণ করা খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: হাছেন আলী জানান, যেহেতু স্থানীয়রা স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাকো নির্মাণ করছে। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। আমি ব্যক্তিগত ভাবে সেখানে সহযোগিতা করবো। পাশাপাশি স্থানীয়রা যাতে সরকারি ভাবে কিছু বরাদ্দ পায় বিষয়টি গুরুত্বসহকারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
ইউএনও রেহেনুমা তারান্নুম যুগান্তরকে জানান, এই মুহুর্ত্বে বরাদ্দ দেওয়া যাচ্ছে না। বরাদ্দ বরাদ্দ এলেই ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।