পীরগাছায় দরজা ভেঙ্গে নামানো হলো মরদেহ:৫ জনের নামে মামলা: সুষ্ঠু তদন্ত দাবি
পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের পীরগাছায় স্বামীর উপর রাগ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনায় স্বামী-শ্বশুর ও শ্বাশুরীসহ ৫ জনের নামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। থানা পুলিশ, নিহতের স্বজন, ইউপি চেয়ারম্যানসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে মরদেহ নামানো হলেও আত্মহত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে নিয়ে হয়রানী করার জন্য এই মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন মামলার আসামীরা। এদিকে রোববার দুপুরে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রংপুরের সহকারি পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) আসিফা আফরোজা আদরী ও পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোমেল বড়ুয়া। এসময় এলাকাবাসী ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
জানা গেছে, বিগত এক বছর আগে কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের শিবু কানিপাড়া গ্রামে সুনীল চন্দ্রের মেয়ে ও রংপুর কারমাইকেল কলেজের অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কৃষ্ণা রানী (২৩) প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করেন পীরগাছা উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের তাউশি বানিয়াপাড়া গ্রামের ভরত চন্দ্রের ছেলে দিলীপ চন্দ্রকে। এরপর মেয়েটি তার বাবার বাড়িতে যাতায়াত করলেও ছেলেকে মেনে নেয়নি মেয়ের পরিবার। মেয়ে অর্নাস পড়ুয়া হলেও ছেলে ৫ম শ্রেণি পাশ হওয়ায় তাদের মাঝে মনোমালিন্য চলছিল। গত ২১ নভেম্বর সকালে মেয়েটি তার বাবার বাড়িতে যাওয়ার জন্য বের হয়। পরে তার স্বামী দিলীপ চন্দ্র ধান কাটামাড়াই শেষে যাওয়ার কথা বলে বাড়িতে তাকে রেখে কাজে চলে যায়। দুপুরে বাড়িতে এসে অনেক ডাকাডাকি ও ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ পাওয়ায় উকি দিয়ে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে তাকে ঝুলতে থাকতে দেখতে পান। পরে থানা পুলিশ, নিহতের স্বজন, ইউপি চেয়ারম্যানসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে মরদেহ নামানো হয় এবং মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়। এদিকে মেয়েটির ভাই সুশান্ত চন্দ্র বর্মন ওই দিন বাদি হয়ে ৫ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় গ্রামবাসী আব্দুল মান্নান, ছামসুল আলম বলেন, ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। পুলিশ, নিহতের স্বজন, ইউপি চেয়ারম্যানসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ঘরের দরজা ভেঙ্গে মরদেহ নামানো হয়। তারপরও মামলার ঘটনাটি সাজানো। কেউ মেরে রাখলে তো ভিতর থেকে দরজা বন্ধ থাকতো না। ঘটনাস্থলের প্রতিবেশি পলি রানী, শেফালী রানী বলেন, একটি সাজানো মামলায় গ্রামবাসীকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমরা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।
এ ব্যাপারে পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোমেল বড়ুয়া বলেন, ঘরের ভিতর একটি সুরঙ্গ থাকায় মামলা নেয়া হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে বোঝা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা।