১১ পৌষ, ১৪৩২ - ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ - 25 December, 2025

”বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি বন্ধের আশংকা উৎপাদন বিপনন সংরক্ষণ ও ব্যাবহারে সমন্বয়হীনতা “

1 day ago
43


মুসলিমুর রহমান, পার্বতীপুর (দিনাজপুর):

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বন্ধের আশংকা দেখা দিয়েছে। এর বিশেষ কারনগুলো হিসেবে বলা হচ্ছে খনি সন্নিকটে কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে লক্ষ্যমাত্রা ভিত্তিক কয়লার ব্যাবহার হ্রাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন না হওয়া, কয়লার যথাযথ ব্যাবহার না হওয়ায় কোল ইয়ার্ডে জায়গা অসংকুলান ও বিদ্যুৎ বিভাগ কয়লার মুল্য চুক্তি মোতাবেক না দেয়া বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

এক সময় কয়লার একটি  বৃহৎ সিষ্টেম লসের কারনে খোলাবাজারে কয়লা বিক্রি বন্ধ করে দেয়া হয়। নিয়ম করা হয় বড় পুকুরিয়ার কয়লা সমুদয় ব্যাবহার করা হবে খনি নিকটস্হ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। যেখানে কয়লার প্রয়োজন প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার মে:টন । আর খনিতে কয়লা উৎপাদনের পরিমান প্রতিদিন সাড়ে তিন হাজার মে: টন । দায়িত্বশীল সুত্রগুলো বলছে  কয়লার উৎপাদন ঠিক থাকলেও বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সে পরিমান কয়লা নিতে পারছেনা। অপরদিকে কতৃপক্ষ পরিবর্তন আনতে পারছেনা বাইরের খোলা বাজারে কয়লা বিক্রির নীতিমালায়। ফলে উৎপাদন বিপনন সংরক্ষণ ও ব্যাবহারে জঠিলতার কারনে কয়লা খনি বন্ধ করে দিতে চায় আমলাতান্ত্রিক একটি চক্র। এ দাবি করা হয়েছে খনি প্রশাসনের একাধিক সুত্র থেকে।

 

এদিকে খনিকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার্থে সোমবার দুপুরে শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের আহবানে সংবাদ সন্মেলন করা হয়েছে। ইউনিয়ন কার্যালয়ের এ সন্মেলনে অংশ নেন খনির ভু অভ্যন্তরের শ্রমিক ইউনিয়নও। বলা হয়েছে, খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা আর কোল ইয়ার্ডে ধারন করা যাচ্ছেনা। মুল কারন হিসেবে জানানো হয় খনি সন্নিকটের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র কয়লার যথাযথ ব্যাবহার করতে পারছেনা। সেখানকার প্রতিদিন চাহিদা দুই থেকে আড়াই হাজার মে:টন। যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে দুইটি ইউনিট বন্ধ থাকে। একটি ইউনিট চলে চড়াই উৎরাই নিয়ে। বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয় মাত্র ৬০ থেকে ৭০ মেঘাওয়াট । অথচ তিন ইউনিট সমন্বয়ে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারিত ছিল ৫২৫ মেঘাওয়াট। এখন ২৭৫ ও ১২৫ মেগাওয়াটের ইউনিট দুটি বন্ধ কয়েক বছর ধরে।

সুত্র বলছেন, এ ব্যাপারে কারোর মাথা ব্যাথা নেই। খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে এখন  কয়লার প্রয়োজন  মাত্র ৭শ থেকে ৮শ মে:টন। কথা হয় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিকের সাথে। তিন জানান,আমরা কি করব প্লান্ট নির্মানকালীন বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের কিছু বিষয় থাকতে পারে। নচেৎ ইউনিটগুলোতে যান্ত্রিক ত্রুটি নিত্য সংগী হবে কেন। সব মিলে কয়লা খনি ও তাপ নিদ্যুৎ কেন্দ্রের সার্ফেস ভাগে কয়লার ধারন ক্ষমতা না থাকায় খোলা বাজারে কয়লা বিক্রির দাবি তুলেছেন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ। তারা বলছেন বিক্রি না হলে উৎপাদন হবে কিভাবে।

অপর দিকে কয়লার বিক্রি মূল্য ১৭৬ ডলার থেকে কমিয়ে কখনো ১০৪ কখনো ১০৫ ডলার করা হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচের সাথে বিক্রি মূল্যের সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে।যে কারনে খনি বন্ধের জোরালো আশংকা করছেন শ্রমিকরা। এক পর্যায় বিদ্যুৎ বোর্ডের তিন কর্মকর্তার অপসারন দাবি করেন তারা। সংবাদ সন্মেলনে বক্তব্য দেন বড় পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি আবুল কাসেম শিকদার,লোড আনলোড কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি শওকত আলী ভু অভ্যন্তর শ্রনিক ইউনিয়ন সভাপতি রবিউল ইসলাম। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাবেক শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন সাধারন সম্পাদক  জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। এ বিষয় জানতে চাইলে কয়লা খনির এমডি আবু তালেব ফরায়েজি  বলেন, আমি কিছু জানিনা। তবে পরে শুনতে পেরেছি সংবাদ সন্মলনের কথা। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি বোর্ড চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ সচিব ফারজানা মমতাজের সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে সম্ভব হয়নি।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth