মুন্নার আকুতি: আমাকে বাঁচান

আঞ্চলিক প্রতিনিধি:
তার নাম মাহফুজার রহমান মুন্না (১৭)। এই বয়সেই তার ওপর ছিল পুরো পরিবারের ভার। রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরশহরের মন্ত্রীবাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে মা ও বড় ভাইকে নিয়ে তাদের ছোট্ট সংসার। নয় বছর বয়স থেকেই সে পরিবার চালানোর জন্য জীবনযুদ্ধে নেমেছিল। অথচ এখন সে নিজেই জীবন-মৃত্যুর এক কঠিন লড়াইয়ে যুদ্ধ করছে। মুন্না ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা বলছে এখনই ব্যবস্থা নিলে সে সুস্থ হয়ে উঠবে। বর্তমানে সে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটে ভর্তি। হিউমাটোলজি (রক্তরোগ) বিভাগের নবম তলার ৫৪ নম্বর বিছানায় তার চিকিৎসা চলছে। মুন্নার আকুতি আমার জীবনটা আপনারা বাঁচান। আমি বাঁচতে চাই। সরকারি বা ব্যক্তি পর্যায় থেকে সবার কাছে সাহায্য চেয়ে আবেদন জানায় মুন্না।’ বর্তমানে ডাঃ মাইনুল ইসলাম, ডাঃ মোছাম্মদ ইসমত আরার তত্বাবধানে অপর দুই চিকিৎসকের অধিনে চিকিৎসা চলছে মুন্নার।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, মুন্নার জন্ম একটি দরিদ্র পরিবারে। বাবা মুহসীন আলী বহু বছর আগে পরিবার ছেড়ে চলে গেছেন। আর ফেরেননি। মা মর্জিনা বেগম অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে কোনও মতে দুই ছেলেকে বড় করে তুলছেন। সংসারে তার নিদারুণ অভাব-অনটন। মাত্র নয় বছর বয়সে মুন্না স্থানীয় একটি ওষুধের দোকানে চাকরি নেয়। সেই সময় মাসে পেত মাত্র ১ হাজার ৫০০ টাকা। এভাবেই কষ্টে কষ্টে চলতে থাকে তাদের জীবন। কিন্তু লেখা পড়া থেকে বিরত ছিল না সে। বর্তমানে মুন্না চাঁদকুঠিরডাঙ্গা বিএম স্কুল অ্যান্ড কলেজের ডিজিটাল টেকনোলজি বিজনেস বিভাগের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি এখনও সেই ওষুধের দোকানেই কাজ করছে মুন্না। বর্তমানে মাসে ৯ হাজার টাকা পায়। মায়ের সামান্য রোজগার আর মুন্নার এই টাকাতেই চলছিল তাদের তিনজনের সংসার। বড় ভাই মিজানুর রহমান ভোলা সরকারি মেডিকেল কলেজে নার্সিং বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছে। তাদের নিজেদের কোনো ঘরবাড়ি নেই। বসবাস করেন ভাড়া বাড়িতে। বর্তমানে পৌরশহরের মন্ত্রীবাজারে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন তারা। এরমধ্যে হঠাৎ করেই যেন সব ওলট-পালট হয়ে যায়। কিছুদিন আগে মুন্না হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে তার। রক্তের পরিমাণ কমতে থাকে। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া হয়। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। শেষ পর্যন্ত পরীক্ষার জন্য ঢাকায় নেওয়া হলে জানা যায় মুন্না ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত।
মুন্নার মা মর্জিনা বেগম বলেন, ‘ছেলেটা ছোটবেলা থেকেই সংসারের জন্য কষ্ট করে যাচ্ছে। এখন যখন একটু ভালোভাবে উঠতে বসতে শিখেছে। তখনই ওর অসুখ ধরা পড়ল । মনে হচ্ছে পায়ের নিচের আমাদের মাটি সরে গেছে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি জানান, মুন্নার চিকিৎসার খরচ অনেক বেশি। শুরুতেই কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু যে ছেলের আয়েই সংসার চলতো। তার চিকিৎসার খরচ কিভাবে জোগাড় করবো সেই চিন্তায় এখন দিশেহারা।
এক মাস আগে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মাহমুদুল হাসানের পরামর্শে মুন্নার চিকিৎসা শুরু হয়। চিকিৎসক তাকে রক্তসহ বিভিন্ন পরীক্ষার পরামর্শ দিলে তাতে ব্লাড ক্যান্সার সনাক্ত হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সময়মতো চিকিৎসা শুরু হলে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা আছে। তবে এই চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। আজ মুন্না মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করছে। সমাজের সচেতন ও বিত্তবান মানুষ পারে তার পাশে দাঁড়াতে। মুন্নার বাঁচার সহায়তা হতে পারে তার জীবনের আশার আলো। আপনার সহানুভূতিশীল সহযোগিতা পারে মুন্নার জীবন বাঁচাতে। যদি আপনি সাহায্য করতে আগ্রহী হন, তবে নিচের নম্বরে তাকে সাহায্য পাঠাতে পারেন যে কেউ। ঠিকানা: মা: মর্জিনা বেগম। ঠিকানা: মন্ত্রীবাজার, বদরগঞ্জ পৌরশহর, রংপুর। মোবাইল নম্বর: ০১৭২৫৭৪৩৩৭৫( বিকাশ/নগদ)। তার নামে (মাহফুজার রহমান মুন্না) পুবালী ব্যাংক, বদরগঞ্জ(রংপুর) শাখায় রয়েছে আকাউন্ড। যার হিসাব নম্বর ০২৯৭১০১১৮৬৮৮৩।