এটিএম আজহারের মুক্তির খবরে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির খবরে আনন্দ মিছিল ও বদরগঞ্জে রিক্সা ও ভ্যান শ্রমিকরা মিষ্টি বিতরণ করেছেন।
মঙ্গলবার ২৭ মে দুপুরে বদরগঞ্জ পৌর শহরের কলেজ গুমড়ি নামক স্থানে রিক্সা চালকরা বিভিন্ন লোকের মুখে মিষ্টি তুলে দেন এবং বিকেলে বদরগঞ্জ উপজেলা জামাত ইসলামীর পক্ষ থেকে একটি আনন্দ মিছিল বের হয়ে যায় পৌর শহরের প্রধান প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ শহীদ শহীদ মিনারে পথ সভা করেন।
তারা জানান, বদরগঞ্জ এর কৃতি সন্তান এটিএম আজহারুল ইসলাম সর্বজনবিদিত সকলের প্রিয় নেতা ও ভালো মানুষ। তিনি ক্ষমতায় না থেকেও রংপুর বদরগঞ্জে অসংখ্য মসজিদ নির্মাণ, ওযু খানা, বিশুদ্ধ পানি খাওয়ার জন্য আমাদের মত ভ্যান রিক্সা চালকদের বাড়িতে টিউবওয়েলসহ নানান ধরনের সহায়তা দিয়ে আমাদেরকে সাহায্য করেছেন। সেই পরিচ্ছন্ন এবং গরিব-দুঃখী মেহনতী মানুষের পাশে থাকা সৎ মানুষটিকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার ১৩টি বছর বিনা অপরাধে জেলখানায় রেখে ফাঁসি কার্যকরের ব্যবস্থা করেছিল। মহান আল্লাহর রহমতে মানুষের দোয়া ও ভালবাসায় তিনি আজকে নির্দোষ হিসেবে খালাস পেয়েছেন। তার খালাসের খবর শুনেই আমরা গরিব ভ্যান ও রিক্সা চালক একত্রিত হয়ে সকলের মুখে মিষ্টি বিজারণ করছি।
ভ্যানচালক রবীন্দ্র চন্দ্র রায় জানান, আমরা অন্য ধর্মের মানুষ হলেও এটিএম আজহারুল ইসলাম বদরগঞ্জ তারাগঞ্জের সকল মানুষকে সমানভাবে দেখতেন। তিনি হিন্দু বৈদ্ধ খ্রিষ্টান যার যে অধিকার সেটাকেই তিনি প্রাধান্য দিতেন। তাকে মিথ্যা ভাবে জেল খাটিয়ে আওয়ামী লীগ সরকার অন্যায় করেছেন। আজকে তার মুক্তির খবর শুনে আমরা রিক্সা ভ্যান চালকরা একত্রিত হয়ে নিজের পকেটের টাকা দিয়ে মিষ্টি কিনে সকলের মুখে দেওয়ার চেষ্টা করছি বলে তিনি জানান।
রিকশাচালক ও শ্রমিক নেতা মোকলেসার রহমান জানান, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবেদিত প্রাণ ও বদরগঞ্জ তারাগঞ্জ তথা সারা বাংলাদেশের মানুষের নয়নের মনি সৎ নির্ভীক ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ এটিএম আজহারুল ইসলামকে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার যুদ্ধাপরাধীর নামে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা সাজিয়ে ফাঁসি দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছিল। আজকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল তাকে নির্দোষ প্রমাণ করে খালাস দেওয়ায় তার নিজ এলাকাসহ সারা দেশের সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ খুশি ও আনন্দিত হয়েছে। আমরা মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করি তিনি যেন সুস্থ হয়ে আবারো বদরগঞ্জ তারাগঞ্জসহ সারা দেশের মানুষের কল্যাণ আত্মনিয়োগ করে মেহনতি খেটে খাওয়া মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন।
বদরগঞ্জ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির কামালুজ্জামান আমার দেশকে জানান, আজকে আমাদের গর্বের দিন আনন্দের দিন। কারণ ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বাংলাদেশ নতুন করে স্বাধীন না হলে আমাদের নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের ১৫ই আগস্ট খুনি হাসিনার সরকার মিথ্যা ট্রাইব্যুনালে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার ফাঁসি কার্যকর করত। কিন্তু সকলের দোয়া ও ভালবাসায় বর্তমান বিচারকগণ সঠিক রায় দিয়ে আমাদের নেতাকে নির্দোষ প্রমান করে মুক্ত করে দিয়েছেন। তিনি আরো জানান এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তিতে জামায়াত ইসলামীর নেতাকর্মীরা আরো উজ্জীবিত হয়েছে।
রংপুর জেলা জামাতের আমি অধ্যাপক গোলাম রব্বানী জুলাই আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ মুগ্ধসহ আহতদের স্মরণ করে, আমার দেশ কে জানান, এটি এম আজহারুল ইসলাম শুধু রংপুর বা বদরগঞ্জের নেতা নন তিনি আমাদের সংগঠন তথা সারা বাংলাদেশে সকলের নেতা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ইতিপূর্বে মিথ্যা তথ্য সন্নিবেশিত করে তাদের মনোনীত বিচারকদের বিয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে স্বৈরাচার খনি ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকার তাকে ফাঁসি দেওয়ার বন্দোবস্ত করেছিল। ফ্যাসিবাদী খুনি হাসিনা বিনা দোষে ১৩ টি বছর জেলখানার অন্ধকার কুটিরে তাকে বন্দী করে নির্যাতন করেছিল।
তিনি আরো জানান জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার আন্দোলন ছাড়া কখনো এটিএম আজহারুল ইসলামকে জীবিত পাওয়া যেত না। কিন্তু মহান আল্লাহর ফয়সালাই বড় ফয়সালা। মহান আল্লাহ অশেষ রহমতে ও বিচারাঙ্গনে ন্যায় ও সৎ বিচারকদের কারণে আজকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল এটিএম আজহারুল ইসলামকে নির্দোষ প্রমাণ করে ঐতিহাসিক একটি রায় প্রদান করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে আগস্ট মাসে তিনি ষড়যন্ত্র মিথ্যা মামলায় আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে রং করেন। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল ১ এ এটিএম আজহারুল ইসলামকে ষড়যন্ত্র মূলক মিথ্যা মামলায় ফাঁসির রায় প্রদান করেন ছাত্র জনতার খনি স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পালিত বিচারকগণ। দীর্ঘ কারাবরণ শেষে মঙ্গলবার ২৭ মে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল তাকে নির্দোষ প্রমাণ করে রায় প্রদান করেন।