মিঠাপুকুরে দু'ভাইয়ের মৃত্যু সনদ জালিয়াতির অভিযোগ

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের মিঠাপুকুরে মৃত্যুসনদ জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি প্রভাবশালী চক্র দুই ভাইয়ের মৃত্যু সনদ পরিবর্তন করে ২৬ শতক জমি বেহাতের পায়তারা চালাচ্ছে। এরফলে দরিদ্র পরিবারের সদস্যরা বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের দুলহাপুর গ্রামের মৃত গবিরউল্ল্যা'র দুই ছেলে তছিম উদ্দিন ও কছিম উদ্দিন। ১৯৭২ সালে তছিম উদ্দিন ও ১৯৮৭ সালে কছিম উদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। তাদের ওয়ারিসগন ২০২৩ তৎকালিন চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান তালুকদারের স্বাক্ষরিত ও ২০২৫ সালে বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যানের কাছ হতে তাদের মৃত্যুসনদ গ্রহন করেন। পরবর্তিতে দূর্গাপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও একটি প্রভাবশালী চক্র মৃত্যুসনদ জালিয়াতির ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দুই সহোদরের ওয়ারিসগন অভিযোগ করেছেন। তারা বলেন, মৃত্যুসনদ জালিয়াতি করে প্রভাবশালী চক্রটি ওই দুজনের ২৬ শতক জমি বেদখলের চেষ্টা চালাচ্ছে। ওই জমিটুকু আল ফারুক ইনিস্টিটিউট উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে দান করেছেন। বর্তমানে ওয়ারিসদের সাথে ওই বিদ্যালয়ের জমি সংক্রান্ত মামলা চলমান রয়েছে।
ওয়ারিসগণের মধ্যে কছিম উদ্দিনের পুত্রবধু আছমা বেগম বলেন, আমার শ্বশুর মৃত্যুবরণ করেছেন ১৯৮৭ সালে। কিন্তু প্রভাবশালী চক্র তার মৃত্যু ১৯৯২ সালে দেখিয়ে জমি বিক্রির দলিল তৈরী করেছেন। বেদখলের চেষ্টা করছেন জমিটুকু। আমরা গরিব অসহায় মানুষ। আমরা সু-বিচারের আশায় আদালতে মামলা করেছি।
নাতি আশিকুর রহমান বলেন, আমার দাদা মৃত্যুর পর আমরা ইউনিয়ন পরিষদ হতে মৃত্যুসনদ তুলেছি। ডিজিটাল মৃত্যুসনদের কপিও আমাদের কাছে আছে। কিন্তু প্রভাবশালী চক্রটি সেগুলো জালিয়াতির চেষ্টা করে যাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ওয়ারিস জানান, তছিম উদ্দিন ও কছিম উদ্দিনের মৃত্যুর পর একটি প্রভাবশালী চক্র তাদের ২৬ শতক জমি দলিল দেখিয়ে বেদখলের চেষ্টা করছেন। পরে আমরা তাদের মৃত্যু সনদ তুলে সঠিক মৃত্যুর সময় সম্পর্কে ধারনা পাই। দূর্গাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান আমাদের ডিজিটাল মৃত্যুসনদ প্রদান করেন। কিন্তু মাসখানেক পরে বর্তমান প্যানেল চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ওই প্রভাবশারী চক্রটির সাথে যোগসাজস করে তাদের মৃত্যুসনদ পরিবর্তন করেছেন।
দূর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বলেন, 'কছিম উদ্দিন ১৯৯২ সালে মৃত্যুবরণ করেছেন। ডিজিটাল মৃত্যুসনদে তা উল্লেখ রয়েছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছেও আমরা গিয়েছিলাম।' কিন্তু ১৯৮৭ সাল উল্লেখ করে আপনি এর আগে একটি ডিজিটাল মৃত্যুসনদ দিয়েছিলেন, সেটি কিভাবে হল?- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'কোন কৌশলে হয়তোবা তারা সেটি করেছে। এটি আমার জানা নেই।'