রংপুরে সিয়ামকে বলৎকার করে হত্যা মামলার আসামীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন
মহানগর প্রতিবেদক:
রংপুর গনেশপুর বকুলতলা জান্নাতবাগ হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোডিং এর শিশু শিক্ষার্থী সিয়াম ইসলাম (১০) কে বলৎকার করে হত্যা করায় মাদ্রাসার শিক্ষক আব্দুর রহমান আব্দুল্লাহসহ সকল জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবিতে এলাকাবাসীর আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) বেলা ১২ টায় নগরীর প্রেসক্লাব চত্বরে আয়োজিত মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সিয়ামের বাবা ভুট্টু মিয়া, এলাকাবাসী ফিরোজ হায়দার, আনোয়ার, সোহানুর রহমান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মনোয়ার হোসেন, সৌধ, মোজ্জাম্মেল প্রমূখ।
মানববন্ধন সূত্রে জানা যায়, রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ৫ নং বালারহাটের বুজরোক ঝালাই খন্দকারপাড়া গ্রামের মোঃ মনোয়ার হোসেন ও ভুষ্টু মিয়া ছেলে মোঃ সিয়াম (১০) কে রংপুর মহানগর কোতয়ালী থানাধীন ২২ ওয়ার্ডের বকুলতলা অবস্থিত জান্নাতবাগ হাফিজিয় মাদ্রাসায় লিল্লাহ বোডিং এ কয়েকদিন আগে ভার্তি করে। সেখানে আবাসিক লিল্লাহ বোডিং এ থাকতো এবং নাজেরা শাখায় পড়াশুনা করতো। গত ২৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় মাদ্রাসার হুজুর মোঃ আঃ রহমান ও আব্দুল্লাহ সিয়ামের বাবার মোবাইল ফোনে রিং করে বলে যে আপনার ছেলে খুবই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে।
মানববন্ধনে পরের ঘটনায় সিয়ামের বাবা বলেন, উক্ত সংবাদ পাইয়া আমিসহ পরিবারের লোকজন দ্রুত রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রওনা হইলে অত্র মাদ্রাসার হুজুর মোঃ আঃ রহমান ও আব্দুল্লাহ ও তার সহকারী হুজুর আমাকে ও আমার পরিবারে লোকজনদেরকে পথিমধ্যে রংপুর বাস স্ট্যান্ড হইতে রিসিভ করিয়া তাদের মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। মাদ্রাসায় যাওয়ার পর বিভিন্ন তালবাহানা করে কালক্ষেপন করিয়া মাদ্রাসার কমিটির লোকজন আসিয়া আমাকে জানায় যে, আপনার ছেলে মোঃ সিয়াম (১০) মৃত্যুবরণ করেছে। সংবাদ শোনার পর আমরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাই। আমি এবং আমার পরিবারের লোকজন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাললে গিয়ে লাশ ঘরে আমার ছেলেকে মৃত অবস্থায় দেখিতে পাই। অতঃপর আমার ছেলের মৃত দেহ ওলটপালট করিয়া দেখিতে পাই যে, আমার ছেলের পায়ুপথে রক্তের দাগ দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখমের চিহ্র দেখা যাচ্ছে।
অতঃপর মাদ্রাসার হুজুর আঃ রহমান আব্দুল্লাহ এর নিকট ও অন্যান্যদের কাছ থেকে জানতে পারি যে, অদ্য ২৮নভেম্বর আছরের নামাজ একসাথে পড়েছে এবং মাদ্রাসার অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে খেলাধুলা করেছে কিন্তু মাগরিবের নামাজের জামাতে দেখা যায় নাই। মাগরিবের নামাজ পড়ে খোজাখুজি করে আমার ছেলেকে মৃত অবস্থায়, মাদ্রাসার নির্মাণাধীন ৩য় তলার টয়লেটের মধ্যে পাওয়া গিয়াছে এবং বলৎকার করে হত্যার পর আমার ছেলের পরিহিত পায়জামায় মলত্যাগ করায় উক্ত মাদ্রাসার হুজুর মোঃ আঃ রহমান ও আব্দুল্লাহ, সিনিয়র ছাত্র মোকলেছসহ অন্যান্য ছাত্র দ্বারা পায়জামাটি খুলিয়া মাদ্রাসার পশ্চিম পার্শ্বের বাথরুমের সামনে ফেলিয়া দেয়। অতঃপর অন্য একটি পায়জামা পড়াইয়া হাসপাতালে নিয়া যায়। আমার ছেলের উক্তরূপ অবস্থা দেখি বুঝিতে পারি যে, যেকোন সময় আমার ছেলেকে জোর পূর্বক বলৎকার করিয়া পরিকল্পিতভাবে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং হত্যার বিষয়টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আমার ছেলের লাশ মাদ্রাসার টয়লেটের ভিতর রাখিয়া আমার কাছে অসুস্থতার কথা বলে। আমার ছেলেকে যারা বলৎকার করে মেরেছে আমি তাদের ফাসির দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় রংপুর ও মিঠাপুকুরের সিয়ামের আত্মিয়স্বজন ও এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।