১২ বৈশাখ, ১৪৩২ - ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ - 25 April, 2025

তিস্তা চরে দেশের বৃহত্তম স্ট্রবেরি প্রকল্প

আমাদের প্রতিদিন
4 weeks ago
116


লালমনিরহাট প্রতিনিধি :

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর গ্রামের স্ট্রবেরিচাষি হাবিবুররহমান (৪৫) বলেন,‘ আমি ৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এক বিঘা  জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেছি।আমি ইতিমধ্যে ৫ লক্ষ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করেছি এবং আশাকরছি আরও দুই লক্ষ টাকা বা তার বেশি টাকার স্ট্রবেরি বিক্রিকরব।’ ‘আমি গত তিন বছর ধরে স্ট্রবেরি চাষ করছি। গত বছর আমি নিজেই স্ট্রবেরি চারা উৎপাদন করেছি,’।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বজরা গ্রামে তিস্তা নদীর চরে দেশের বৃহত্তম স্ট্রবেরি প্রকল্প করা হয়েছে। ১২ একর জমিতে সাড়ে তিন লক্ষ স্ট্রবেরি চারা রোপণ করা হয়েছে। এই প্রকল্পে দুই উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক এবং হারুনুর রশিদ এক কোটি ৪৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কুড়িগ্রামে আটটি প্লটে ১৫ একর এবং লালমনিরহাটে ছয়টি প্লটে ৪ একর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করা হয়েছে। তাদের কেউ ভালো ফলন পাচ্ছেন আবার কেউ পাচ্ছে না। স্ট্রবেরি উৎপাদনে ভালো ফলন পেতে চারা নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার নাজিমখান গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম (৫০)  এক একর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেছেন। ভালো ফলন পাচ্ছেন এবং তিনি লাভবান হচ্ছেন। স্ট্রবেরি চাষে তিনি ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা খরচ করেছেন এবং ইতিমধ্যেই ১৬ লক্ষ টাকায় স্ট্রবেরি বিক্রি করেছেন। ‘আমি আশা করছি আরো ৩-৪ লক্ষ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করব,’ তিনি  বলেন।  তিনি গত চার বছর ধরে স্ট্রবেরি চাষ করছেন।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার তিস্তা নদীর চরে দেশের বৃহত্তম স্ট্রবেরি প্রকল্প প্রস্তুতকারী দুই উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক এবং হারুনুর রশিদ আশানুরূপ ফলন না পাওয়ায় হতাশ।

দুই উদ্যোক্তার সাথে কথা বলে জানা গেছে, তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে ৬টি জাতের সাড়ে তিন লক্ষ স্ট্রবেরি চারা সংগ্রহ করেছেন। এই চারা সংগ্রহ করতে তারা ৪২ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। স্ট্রবেরি প্রকল্পের জন্য চারজন কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের প্রত্যেককে মাসিক ১৫ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হচ্ছে। চর এলাকায় স্ট্রবেরি চাষের জন্য তাদের পর্যাপ্ত সার, কীটনাশক এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হয়েছে।

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, তাদের সংগ্রহ করা স্ট্রবেরি চারা ভালো মানের ছিল না। প্রতি একর জমিতে ৮-১৯ টন স্ট্রবেরি ফলন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখন মাত্র এক টন পাওয়া যাচ্ছে। খেত থেকে প্রতি কেজি ৪৫০-৫০০ টাকা দরে স্ট্রবেরি বিক্রি হচ্ছে। "এই প্রকল্পে আমাদের প্রায় এক কোটি টাকা লোকসান হবে," ।

আরেক উদ্যোক্তা হারুনুর রশিদ বলেন যে স্ট্রবেরি খেতের যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের কোনও ঘাটতি নেই। তারা সমস্ত আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন। প্রত্যাশিত স্ট্রবেরি ফলন না পেয়ে তারা অত্যন্ত হতাশ। "তবে আমরা আশা ছাড়িনি। ভবিষ্যতেও আমরা তিস্তা চরে একটি স্ট্রবেরি প্রকল্প করব। এই বছর আমরা নিজেরাই চারা প্রস্তুত করব," ।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন যে তিস্তা চরে ১২ একর জমিতে দুই উদ্যোক্তা আবদুর রাজ্জাক এবং হারুনুর রশিদের স্ট্রবেরি প্রকল্প দেশের বৃহত্তম স্ট্রবেরি প্রকল্প। চারা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভুল করার কারণে তারা প্রত্যাশিত উৎপাদন পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রতি একর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করতে ১২-১৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়। ‘যদি দুই উদ্যোক্তা নিজেরা চারা উৎপাদন করেন এবং পরবর্তি বছর স্ট্রবেরি প্রকল্প প্রস্তুত করেন তবে তারা লাভবান হবেন,’ ।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth