মিঠাপুকুরে ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ

মিঠাপুকুর (রংপুর) প্রতিনিধি:
রংপুরের মিঠাপুকুরে এক ইউনিয়ন সচিবের বিরুদ্ধে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন করতে অতিরিক্ত টাকা নেওয়াসহ নানা দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই সচিবের নাম শাহাদত হোসেন। তিনি উপজেলার ৩ নং পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব হিসেবে কর্মরত আছেন।এমন ঘটনায় ৩০সেপ্টেম্বর রংপুর জেলা প্রশাসক এবং দূর্নিতী দমন অধিদপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী আখেরুজ্জামান।
অভিযোগ সূত্র জানা যায়, উপজেলার সদরপুর গ্রামের আখেরুজ্জামান তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য গত ২৩ সেপ্টেম্বর ৩নং পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদে একটি ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন্য যান। সেখানে দায়িত্বরত সচিব মোঃ শাহাদত হোসেন লাইসেন্স নবায়নের জন্য অতিরিক্ত ফি বাবদ তার কাছে ৩০০০/- (তিন) হাজার টাকা দাবী করেন এবং নানা ভাবে হয়রানি করেন। পরে সচিব শাহাদত হোসেনের ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বারে ১৪৮৭/- টাকা খরচসহ পাঠাতে বলেন। গত বছরে ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের ফি ছিল ৩৩০/-টাকা। কিন্তু চলতি বছরে ১৪৬০/- টাকা ফি নেয়া কতোটুকু যুক্তিসংগত প্রশ্ন করিলে শাহাদাত হোসেন কোন উত্তর না দিয়ে আখেরুজ্জামানকে তড়িঘড়ি করে ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করেন।
স্থানীয়রা জানান, ইউপি সচিব শাহাদত হোসেন এর পূর্বে ৯নং ময়েনপুর ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সেখানে ও দূর্নীতির পাহাড় গড়ে তুলেছেন। সেখানে জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যু সনদ ও জন্ম সনদ সংশোধনে অতিরিক্ত ফি আদায় সহ পুরো ইউনিয়নবাসীকে জিম্মি করে রাখতেন। শাহাদত হোসেন এই দূর্নীতির অভিযোগে পরে তাকে পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদে হস্তান্তর করেন। তবে এখানেও তার দূর্নীতি যেনো থামছেই না।
নাম প্রকাশ্যে অনইচ্ছুক কয়েকজন জানান,এই শাহাদত হোসেন মানেই দূর্নীতির আখড়া। তার বাবার কিছুই ছিলো না। সেই সময়ে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে দাদা/নানা বানিয়ে সচিব পদে চাকরি নিয়েছেন। এখন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন শাহাদাত। প্রতি বছরেই জমি কিনছেন সে। গড়েছেন আলিশান বাড়ী। যদি দূর্নীতি না করতো তাহলে অল্প সময়ের মধ্যে এতকিছু করা সম্ভব হতো না।
ভুক্তভোগী আখেরুজামান বলেন, সচিব শাহাদত হোসেন আমার কাছে ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের জন্য ৩ হাজার টাকা দাবি করেছিলেন। পরে তার ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে ১৪শত ৮৭টাকা খরচসহ পাঠাতে বলেন। আমি টাকা পাঠিয়ে দেই। এই ইউনিয়ন পরিষদে এরকম ঘটনায় প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে এবং এর ফলে জনগণের চমর ভোগান্তীর সৃষ্টি হচ্ছে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেনকে ফোন করেও পাওয়া না যাওয়ার তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ইউনিয়ন সচিব শাহাদাত হোসেন মুঠোফোনে জানান, এই অভিযোগটি সম্পন্ন মিথ্যা। এই অভিযোগের জবাব ও আমি দিব। তবে প্রতিবেদক তার ব্যক্তিগত বিকাশ নাম্বারে টাকা নেওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলে, এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি শাহাদাত।
রংপুর দূর্নিতী দমন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শাওন মিয়া জানান, অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল জানান, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।