আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ইউপি সদস্যের নামে তিন মামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে চাঁদাবাজি, জমি দখল, চুরি ও অপহরণসহ তিনটি মামলার আসামি হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বড়বিল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. লেবু মিয়া।
তার দাবি, তিনি আদালতের রায়ের একটি আদেশ বাস্তবায়ন করার কারণেই এসব মামলার শিকার হয়েছেন। একটি মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেও বাকি মামলাগুলোতে নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে বলে জানান তিনি।
মামলার সূত্র ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বড়বিল ইউনিয়নের পাকুড়িয়া শরীফ এলাকার বাসিন্দা এ এস এম ওবায়দুল্লাহ ওই ইউনিয়নের মনিরাম এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেমের কাছ থেকে পাকুড়িয়া মৌজার ৯৬ শতক জমি (জে.এল-১২) ক্রয়রায় সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছিলেন। পরবর্তীতে ওবায়দুল্লাহ মারা গেলে তার সন্তানরা ওই জমি ভোগদখল করে আসেন।
গত ২০২৪ সালের জুলাই মাসে আবুল কাশেম চৌধুরী তার লোকজন নিয়ে মৃত ওবায়দুল্লাহর ক্রয়কৃত সেই ৯৬ শতক জমির ধান কেটে নিয়ে আসেন। এরপর ধানের মালিক ওবায়দুল্লাহর ছেলেরা গঙ্গাচড়া থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ কাশেমের বাড়ি থেকে ধানগুলো উদ্ধার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য লেবু মিয়ার জিম্মায় রাখে।
দু’মাস পর আদালতের আদেশে প্রকৃত মালিকদের হাতে ওই ধান ইউপি সদস্যের বাড়ি থেকে পুলিশের মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে আবুল কাশেম ইউপি সদস্য লেবু মিয়াসহ ১০ জনের নামে একে একে তিনটি মিথ্যা মামলা করেন। এসব মামলার একটি থেকে লেবু মিয়া অব্যাহতি পেলেও এখনো দুটি মামলা তার নামে চলমান।
সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে মামলার ১ নম্বর সাক্ষী মতলুবর রহমান বলেন,আসলে আমি এই মামলাগুলোর কিছুই জানি না। লেবু মেম্বার খুব ভালো মানুষ। তিনি প্রায় তিন বছর ধরে অসুস্থ এবং পা ভেঙে বাড়িতে শয্যাশায়ী আছেন।
এসময় কথা হয় ২ নম্বর সাক্ষী রুহুল আমিনের সঙ্গে। তিনি জানান,
সত্যি বলতে আজকেই জানতে পারলাম আমি আবুল কাশেমের মামলার সাক্ষী! মানুষটা মনে হয় পাগল হয়ে গেছে। এগুলোর কি দরকার ছিল? আমাদের নাম ব্যবহার করে সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ঘটনা তো সত্য নয়, আর লেবু মেম্বার অনেক দিন ধরেই অসুস্থ। আমার অনুরোধ, যেন এই বিষয়গুলো আর না বাড়ে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী আবুল কাশেমের সঙ্গে সাক্ষীদের মুখোমুখি করা হলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে বাড়ির ভেতরে চলে যান।
মামলার আসামি ইউপি সদস্য মো. লেবু মিয়া বলেন,আমার যদি আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করা ভুল হয়ে থাকে, তাহলে আমি আদালতের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করব—আমাকে শাস্তি দিন, কিন্তু আমি অসুস্থ এই মানুষটাকে যেন আর কষ্ট না দেন। আমি এই মিথ্যা মামলার ঘানি প্রায় দুই বছর ধরে টানছি।
এ বিষয়ে গঙ্গাচড়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল এমরান বলেন, এগুলো মামলা থানায় হয়নি। যদি তদন্তের জন্য আদালত থেকে আমাদের কাছে আদেশ আসে, তাহলে আমরা সঠিকভাবে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন পাঠাব।