কাউনিয়ায় তিস্তায় বিপদসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত, উচুঁ স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ

কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি:
একদিকে বৃষ্টির পানি, অন্যদিকে উজান থেকে নেমে আসা ঘোলা জলে রংপুরের কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নদী উপচে সেই পানি হু হু করে ঢুকছে নিম্নাঞ্চলগুলোতে। ফলে পানি বন্দি হওয়ায় আশঙ্কায় তিস্তার তীরবর্তী মানুষেরা উচুঁ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেল ৩ টায় কাউনিয়া উপজেলার রেলসেতু পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ২৯ দশমিক ৫১ মিটার। যা ৭ ঘণ্টার ব্যবধানে সকাল ৯ টা থেকে বিকেল পর্যন্ত সেখানে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে একই সময় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ০৫ মিটার, যা বিপৎসীমার শুন্য দশমিক ১০ সেন্টিমিটার নিচে।
নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে রংপুরের কাউনিয়া, গংগাচড়া ও পীরগাছা উপজেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলসহ নীলফামারী ও লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
কাউনিয়া উপজেলা টেপামধুপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, ভোরের পর থেকে পানি বাড়ছে নদীতে। ইতিমধ্যে তার ইউনিয়নের হরিচরণশর্মা, চর গনাই, হয়বৎখাঁ গ্রামের নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু বাড়ি পানিবন্দী হয়ে পড়েছে, তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। ক্রমে বাড়ছে তিস্তা নদীর পানি। বন্যার আশঙ্কায় রয়েছি। অনেকেই উচুঁ স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। দুপুরের দিকে তীরবর্তী তিনটি বসতভিটা নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
চর হয়বৎখাঁ গ্রামের সোবহান আলী বলেন, গভীররাত থেকে পানি যে হারে বাড়তেছে তাতে পানি বাড়ি ঘরে ঢুকে গেলে গবাদিপশু আর বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে বিপদে পড়ে যাব। তাই সকালের দিকে গবাদিপশু আর ছোট বাচ্চাদের উচুঁ স্থানে আত্মীয়ের বাড়ীতে রেখে দিয়েছি।
বালাপাড়ার গদাইয়ের বাসিন্দা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। অনেকের পুকুরের মাছ ভেসে গেছে, ডুবে গেছে আমন ধানের খেত। পানি বন্দি হওয়ার আতঙ্কে রয়েছি। তিনি সহ অনেকেই উচুঁ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
জানতে চাইলে কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মহিদুল হক বলেন, আজ তিস্তা নদীর পানি অব্যাহতভাবে বাড়ছে। আমরা নদীর তীরবর্তী বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শণ করেছি। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। উপজেলার বালাপাড়া ও টেপামধুপুর ইউনিয়নে নদী তীরবর্তী বেশ কিছু এলাকা পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে গ্রামীন রাস্তা। আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের খাদ্য সামগ্রী বিতরনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তালিকা করে প্লাবিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থদের খাদ্য সামগ্রী বিতরন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।