লালমনিরহাটে লাখো মানুষ পানিবন্দি !

লালমনিরহাট প্রতিনিধি :
ভারত থেকে নেমে আসা পানিতে লালমনিরহাট জেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সোমবার ভোর রাতে তিস্তা নদীর পানি জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩৫ সে: মি: উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে দিয়ে পানির গতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে জেলার ৫ উপজেলার তিস্তা তীরবর্তী এলাকা গুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। সোমবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করলেও এখনো পানি বন্দি হয়ে আছে লাখো মানুষ।
সড়ে জমিন ঘুরে ও খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, রোববার সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। রোববার বিকাল ৩ টায় তিস্তা নদীর পানি তিস্তা ব্যারাজ দেয়ানী পয়েন্টে বিপদসীমার ১ সে: মি: নিচে হলেও সন্ধ্যার পর প্রচন্ড গতিতে তা বাড়তে থাকে। রাত ১২ টায় সেই পানি বিপদসীমার ৩৫ সে:মি: উপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। পানির চাপে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ীসহ কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার অসংখ্য রাস্তা ও অস্থায়ী বাঁধ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। তিস্তা ব্যারাজের ফ্লাড বাইপাসের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হতে থাকে। ফলে রেড এলার্ট জারি করেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে জেলার ৫ উপজেলার লাখো মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়ে। ডুবে যায় হাজার হাজার একর জমির আমন ক্ষেত। ভেসে যায় শত শত পুকরের মাছ।
এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত অন্তত ১২ ঘণ্টা তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়ারুল রহমান জিয়া জানান, তার ইউনিয়নে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। একই কথা বললেন সির্ন্দুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শায়খুল আরিফিন বলেন, তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় এখন রোপা আমন, চিনাবাদাম ও সবজির চাষ চলছে। পানি যদি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, তাহলে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হবে। তবে এক থেকে দুই দিনের মধ্যে পানি নেমে গেলে ক্ষতি তুলনামূলক কম হবে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে এবং তবে এখন পানি কমতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।