২৫ আশ্বিন, ১৪৩২ - ১১ অক্টোবর, ২০২৫ - 11 October, 2025

পীরগাছায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি দিনে-দুপুরে রাস্তার গাছ কেটে নিচ্ছে প্রভাবশালীরা

6 hours ago
34


নিজস্ব প্রতিবেদক:

রংপুরের পীরগাছায় আইন শৃঙ্খলার চরম অবনতির অভিযোগ উঠেছে। বেড়েছে চুরি, অজ্ঞান পার্টির কর্মযজ্ঞ ও সরকারি রাস্তার গাছ কাটার অসুস্থ প্রতিযোগিতা। সরকারি গাছ কাটার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে, স্ব-ঘোষিত ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা, কিছু জনপ্রতিনিধি, কিছু সরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রভাবশালীরা আর এদেরকে সহযোগিতা করছেন ফরেষ্টের পীরগাছা  রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা। গাছ কাটার বিষয়ে একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করেও গাছ খেকোদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের।

জানা যায়, পীরগাছার প্রভাবশালীরা সরকারি রাস্তার গাছ কেটে নিচ্ছেন আর প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা নিরব। এরইমধ্যে উপজেলার তাম্বুলপুর ইউনিয়ন রামগোপাল এলাকার মৃত আফাজ উদ্দিনের ছেলে জাফর আলীকে সরকারি রাস্তার গাছ কেটে নিতে দেখা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একটি চক্র দীর্ঘদিন হতে পীরগাছা-তাম্বুলপুর রাস্তাসহ তাম্বুলপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন রাস্তার গাছ রাতের অন্ধকারে চুরি কেটে নিচ্ছে, কেউ প্রতিবাদ করার সাহস না করায় ও প্রশাসনের নীরবতায় বুধবার (৮ অক্টোবর) দিনের বেলা রামগোপাল মৌজার স্থানীয় ইটা খাওয়া গাছের তল হতে পশ্চিম রামগোপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যাওয়ার রাস্তার দুই ধারের বিশাল-বিশাল গাছ কেটে নিচ্ছে জাফর বাহিনী।

স্থানীয় ইউপি সদস্য সাফিন মিয়া বলেন, দীর্ঘদিন হতে পশ্চিম রামগোপাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফজলু মাস্টার, বুলেট, সাত্তার ডলার, আলতাফ ও তছিররা রাস্তার গাছ অল্প মূল্যে বিক্রি করেন আর জাফর আলী ও আমিনুল ইসলামরা বেশী লাভের আশায় ক্রয় করেন। এই সিন্ডিকেটটি প্রায় ২০০/২৫০ গাছ অবৈধভাবে বিক্রি করেছেন। তবে ফজলু মাস্টার বলেন, মাত্র ১১৮ টি গাছ কাটা হয়েছে। অভিযুক্ত জাফর আলী গণমাধ্যম কর্মীদের দাম্ভিকতার সহিত বলেন, বর্তমান দেশে নির্বাচিত সরকার নেই, তাই আমরা যখন যেখানে যা করব সেটাই আইন আদালত। শাহীনুর রশিদ কামাল বলেন, ফজলু মাস্টারদের সংঘবদ্ধ চক্রটি রাস্তার গাছ অবৈধভাবে কেটে সাবার করে দিয়েছে।

গ্রাম পুলিশ আম্বার আলী বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাম্বুলপুরের কামালের “ছ”মিল হতে রাস্তার গাছগুলো উদ্ধার করে পরিষদে নিয়ে এসেছি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই বলেন, কামালের অনুমোদনহীন “ছ”মিলে রাস্তার চোরাই গাছ হরহামেশাই ক্রয় করা হয় বা চিরাই করা হয়।

ছাওলা ইউনিয়নের দক্ষিণ ছাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার গাছ স্থানীয় শহিদুল, মুকুল, বকুল, নুরুল হুদা ও তুহিনরা অবৈধভাবে কেটে নেওয়াকে কেন্দ্র করে আজিজুল ইসলাম অভিযোগ দিয়েও অজ্ঞাত কারণে আইনের আওতায় আসছে না।

ছাওলা গ্রামের আকবার আলী মিস্ত্রি গত ৬ অক্টোবর সোমবার বিকেলে তিনটি গরু তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করেন। রাতে সিদ কেটে ঘরে চোর ঢুকে টাকা রাখার বাক্স চুরি করে নিয়ে যায়। টাকা নিয়ে বাড়ির বাহিরে বাক্স ফেলে দিয়ে যায় চোর চক্র। পরের দিন সকালে তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা চুরি হওয়া দেখে ও শুনে আকবার আলীর বাবা হানিফ উদ্দিন অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বিকেলে মারা যান।

তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ঘগোয়া গ্রামের আবেদ আলী মাস্টারের বাড়িতে গত ১ অক্টোবর দিনগত রাতে প্রায় তিন লাখ টাকার স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যায়।  এরইমধ্যে তিনটি ব্রিক ফিল্ডের নয়টি ও বরেন্দ্র কর্তৃক পরিচালিত গভীর নলকূপের তিনটি ট্রান্সফারসহ ১৪ টি চুরি হয়েছে।

তাম্বুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বজলুর রশিদ মুকুল বলেন,“আমি ঘটনাটি জানার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য ঘটনা স্থলে গ্রাম পুলিশ পাঠিয়েছি। গাছ গুলো পরিষদ মাঠে রাখা হয়েছে। সরকারি সম্পদ রক্ষা করা সবার দায়িত্ব। যারা গাছ কেটেছে তাদের শনাক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল বলেন,“সরকারি গাছ কাটা একটি গুরুতর অপরাধ। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়

// Set maxWidth