ঘোড়াঘাটে এনথ্রাক্স আতঙ্কে মাংস বিক্রি কমেছে
ঘোড়াঘাট প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে এনথ্রাক্স রোগের আতঙ্কে মাংস বিক্রি হঠাৎ কমে গেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে স্থানীয় হাট বাজারে গরুর মাংস সহ অন্যান্য মাংসের ক্রেতা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন মাংস ব্যবসায়ীরা। সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী রংপুর জেলার মিঠাপুকুর ও পীরগঞ্জ উপজেলা সহ কয়েকটি উপজেলায় এনথ্রাক্স রোগী সনাক্ত হলে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে এর প্রভাব দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটেও পড়েছে। ক্রেতারা মাংস কেনা থেকে বিরত থাকছেন, আর কসাইরা পড়েছেন বিপাকে।
উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারের মাংস বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, আগে দিনে ৬০ থেকে ৭০ কেজি মাংস বিক্রি হতো, এখন ৩০ থেকে ৪০ কেজি বিক্রি হয় অনেক সময় নিয়ে। মানুষের মনের মধ্যে এনথ্রাক্স নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় বিক্রি কমেছে। আরেক মাংস বিক্রেতা রফিকুল ইসলাম জানান, সরকারি দপ্তর থেকে এনথ্রাক্স সহ বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই আমাদের মতো মাংস বিক্রেতাদের পথে বসতে হবে। উপজেলার কশিগাড়ী গ্রামের বাবাল দোকানদার সাথে কথা বলে জানান, আমরা আগে থেকেই জানি ঘোড়াঘাট উপজেলার বিভিন্ন বাজারে অসুস্থ গরুর মাংস মাঝে মাঝেই বিক্রি হয়। এখন এনথ্রাক্স এর কারণে আমরা বাজার থেকে মাংস কেনা বাদ দিয়ে দিয়েছি। যখন প্রয়োজন হয় গ্রামের কিছু লোক মিলে হাট থেকে সুস্থ গরু কিনে গ্রামেই জবাই করে যার যেমন দরকার মাংস ভাগ করে বাসায় নিয়ে যাই।
ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. রবিউল ইসলাম জানান, এনথ্রাক্স একটি জীবাণুজনিত রোগ যা সাধারণত আক্রান্ত পশুর রক্ত, মাংস বা চামড়ার সংস্পর্শে মানুষে ছড়াতে পারে। তবে সচেতনতা ও সঠিকভাবে রান্না করা মাংস খেলে সংক্রমণের আশঙ্কা প্রায় শূন্য। পার্শ্ববর্তী জেলার কয়েকটি উপজেলায় এনথ্রাক্স রোগী সনাক্ত হওয়ার কারণেই মূলত ঘোড়াঘাটে এর প্রভাব পড়েছে। দ্রুত টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেন, মাংস ক্রয়ের আগে পশু জবাইয়ের অনুমোদন ও সনদ যাচাই করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে ভালোভাবে সিদ্ধ করা মাংস খেলে এনথ্রাক্সে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা নেই। এমনকি কাঁচা মাংস হাত দিয়ে ধরলেও কোনো সমস্যা নাই। তবে যে ব্যক্তি কাঁচা মাংস হাত দিয়ে ধরবে তার শরীরে যদি কোনো ক্ষত থাকে সেই ক্ষত দিয়ে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। উপজেলা প্রাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগও এ বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে। জনসচেতনতামূলক মাইকিং ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে মানুষকে এনথ্রাক্স প্রতিরোধ সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে।