ঘোড়াঘাটে ৩৪টি মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে দুর্গাপূজা, চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

ঘোড়াঘাট, প্রতিনিধিঃ
দরজায় কড়াা নাড়ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। উৎসবকে ঘিরে ঘোড়াঘাট উপজেলায় ৩৪ টি মন্ডপে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্ততি। শিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় মাটির প্রতিমা হয়ে উঠছে অপরূপা। একই সঙ্গে দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ করতে দিনরাত মন্দিরগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শাস্ত্রমতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পঞ্জিকা অনুযায়ী আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা । আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর দেবীর বোধন ও মহাপঞ্চমী এবং ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মধ্যে দিয়ে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর মহাসপ্তমী এবং ৩০ সেপ্টেম্বর মহা অষ্টমী অনুষ্ঠিত হবে। ১ অক্টোবর মহানবমী এবং ২ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটবে। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযা, এ বছর দুর্গাদেবী গজে বা হাতির পিঠে চড়ে মর্ত্যে আগমন করবেন। আর দোলা বা পালকিতে চড়ে ফিরে যাবেন। উপজেলা প্রশাসন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় মোট ৩৪টি পূজামন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।
ঘোড়াঘাট উপজেলা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিশদের সভাপতি মনোরঞ্জন মোহন্ত ও উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি কার্তিক সরকার জানান, উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সম্পন্নের লক্ষ্যে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হচ্ছে। এদিকে শারদীয় দুর্গোৎসবে শান্তি-শৃঙ্খলা ও উৎসবের আমেজ বজায় রাখতে সেনাবাহিনীও মাঠে রয়েছে। সেই সঙ্গে পূজা চলাকালীন গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সজাগ অবস্থায় রয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন রফিকুল ইসলাম এবং পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তিতিমূলক সভা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময়, পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একের পর এক সভা করছে উপজেলা প্রশাসন। এর পাশাপাশি বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে যোগাযোগ খোঁজ খবর নিচ্ছেন। প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি পূজামন্ডপে আমাদের সেচ্ছাসেবক কর্মী দায়িত্ব পালন করবে।
সরেজমিনে বিভিন্ন উপজেলায় ঘুড়ে দেখা যায়, পূজা মন্দিরগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রতিমায় চলছে শেষ মুহূর্তের রং তুলির আঁচড়। প্রতিমা তৈরি ও সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। দম ফেলার ফুরসত নেই এখন কারিগরদের। ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ডেকোরেটররা শুরু করেছে তোরণ নির্মাণ ও আলোকসজ্জার কাজ। কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যথাসময়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই দুর্গা দেবীর আরাধনার জন্য মন্ডপগুলো প্রস্তত করা হবে। কারিগররা আরো জানান, তারা একেকজনে একাধিক প্রতিমা তৈরি করছেন। ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের প্রতিমা বিক্রি করে তারা লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন। লাভ-লোকসান যাই হোক বংশগত পেশার প্রতি সম্মান জানিয়েই তারা আনন্দের সাথে প্রতিমা তৈরি করেন। প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে বিরতিহীনভাবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিমা তৈরির সব কাজ শেষ করে কমিটির কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে জানান কারিগররা।