গঙ্গাচড়ায় তিস্তার চরাঞ্চলে অধিক লাভের আশায় আগাম মিষ্টি কুমড়ার চাষ
নির্মল রায়:
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তার চরাঞ্চলে ব্যাপক মিষ্টি কুমরার চাষ হয়েছে। অধিক লাভের আশায় অধিকাংশ কৃষক এবছর আগাম মিষ্টি কুমরার বীজ রোপন করেছেন।
বীজ থেকে ভালো চারা গজিয়ে বেড়ে উঠায় কৃষকের মুখে সুখের হাসি ফুটেছে। উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল্লা আল হাদী জানান,
বর্ষাকালে তিস্তা নদীতে খরস্রোত থাকলেও হেমন্তেই তিস্তার বুকে জেগে উঠে অসংখ্য বালু চর। বর্ষায় নদীর দু'কুল উপচিয়ে বন্যায় প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। একই সাথে ভাঙনের মুখে পড়ে বিলিন হয় ফসলি জমি বসতভিটাসহ স্থাপনা। বর্ষার বিদায় বেলায় ধুধু বালু চরে পরিনত হয় তিস্তা নদী।
বন্যা আর ভাঙনে সম্পদহারা চরাঞ্চলের মানুষ জীবন জীবিকার তাগিদে জেগে উঠা বালু চরেই ফসল বুনেন। ধু ধু বালুতে ফসল ফলানো বেশ কষ্টসাধ্য। পেটে দু'মুঠো ভাত জোগাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে বালু চরে ফসলের চাষাবাদ করেন নদীপাড়ের মানুষ। তবে চরাঞ্চলের জমিতে শাকসবজি, ভুট্টা, বাদাম, মিষ্টি কুমড়ার কদর বেশি। চরাঞ্চলের বালুতে মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন ফসলের চাষ হয়।
গজঘণ্টা ইউনিয়নের চর ছালাপাকের চাষি নজরুল ইসলাম জানান, বালু চরে গর্ত করে বালু সড়িয়ে নিয়ে গর্তে বাহির থেকে আনা পলিমাটিতে গর্ত পুরন করা হয় । প্রতিটি গর্তে জৈবসার দিয়ে মিশ্রন করে তবে গর্ত প্রতি ৩/৪টি করে মিষ্টি কুমড়ার বীজ বপন করতে হয়। এরপর চারা গাছ বড় হলে পানি সেচ আর একটু পরিচর্যা করলে ফুল ফল আসতে শুরু করে। বালু চরে গাছ বিচরন করে তাই খরচ করে মাচাং দিতে হয় না। প্রতিটি গাছে প্রায় ৮/১০ টি করে কুমড়া আসে। প্রতিটি কুমড়া ৩/৪ কেজি ওজনের হয়ে থাকে। প্রতি কুমড়া ক্ষেতেই ৪০/৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
কৃষক রাজা মিয়া (৪৮) বলেন, কম খরচে অধিক লাভ করতে চরাঞ্চলের বালু জমিতে মিষ্টি কুমড়ার বিকল্প নেই। কুমরা চাষে সরকার যে প্রণোদনা দেয় তা খুবই অপ্রতুল।
তারা কুমড়া চাষে প্রণোদনা বাড়ানোর দাবি জানান।
গঙ্গাচড়া উপজেলা কৃষি অফিসার সৈয়দ শাহিনুর ইসলাম বলেন, চরাঞ্চলের কৃষকদের কুমড়া চাষে বীজ, রাসায়নিক সার প্রদান করা হয়েছে। ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে গিয়ে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।