নীলফামারীতে পেপার মিলের কেমিক্যালে অস্তিত্ব সংকটে খড়খড়িয়া নদী
নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীর সৈয়দপুর ইকো পেপার মিলের বর্জ্যে ও কেমিক্যালে অস্তিত্ব সংকটে সৈয়দপুরের খড়খড়িয়া নদী।কেমিক্যালের বিষাক্ত পানিতে মাছসহ জলজ প্রাণি মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ে কৃষকরা ব্যবহার করছেন না ওই নদীর পানি। এতে নদীটি মরা নদীতে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বাইপাস সড়কের পাশে রাবেয়া ফ্লাওয়ার মিল এলাকা সংলগ্ন নদীর তীরে রয়েছে একটি পেপার মিল। এর বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। বদ্ধ বিদঘুটে পানিতে জাল ফেলছে জেলেরা। কিন্তু ওই নদীর উত্তরে ১ কিলোমিটার ও দক্ষিণে ১ কিলোমিটার পর্যন্ত কোনো মাছ নেই। জীবিকা বন্ধ হয়েছে জেলেদের।শহর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন এলাকার জেলে আবদুল হাকিম জানান, ‘আগে এই নদীতে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত। আর মাছ ধরেই চলত সাত সদস্যের সংসার। পানির বিষাক্ততায় মাছ ধরতে গিয়ে শরীরে চুলকানিসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে।’
কৃষক মো. মকবুল হোসেন, আব্দুল মান্নান, মোকছেদ আলী, কালু ও আব্দুল মতিনসহ অনেকেই জানান, ‘পেপার মিল আমাদের দেশের জন্য লাভজনক হলেও আমরা সেচের পানি ব্যবহার করতে পারছি না। পেপার মিলের বিষাক্ত বর্জ্য আর পৌরসভার ড্রেনের ময়লায় নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এ কারণে সামান্য বৃষ্টিতে প্লাবিত হয় আশেপাশের এলাকার আবাদি জমি ও ঘরবাড়ি। এতে জনপদ ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।’
খড়খড়িয়া নদী রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘নদী এদেশের কৃষিতে অর্থনৈতিক জোগানে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। কিন্তু মিল ইন্ডাস্ট্রির বর্জ্যে পানি বিষাক্ত করে ফেলছে। দ্রত এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া না হলে কৃষকদের নিয়ে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।এ ব্যাপারে, ওই ইকো পেপার মিলের মালিক আলহাজ সিদ্দিকুল আলম সিদ্দিক বলেন, ‘আগের মতো তার মিলে তেমন একটা পেপার তৈরি হয় না। ফলে বর্জ্য বা কেমিক্যালও তেমন একটা পড়ে না খড়খড়িয়া নদীতে। এছাড়া ইটিপি তৈরি করা হয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে সেই টুকুও পড়বে না বলে জানান তিনি।’
সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএওনও) ও পৌরসভার প্রশাসক নুর-ই আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘পরিবেশ অধিদফতরের সাথে কথা বলে বিষাক্ত বর্জ্য ফেলা রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।